টানা নিয়ে আলোচনা

টানা নিয়ে আলোচনা
বৈদ্যুতিক লাইনে ব্যবহৃত পােল ঝড়বৃষ্টি বা তারের টানে যে কোনাে দিকে হেলে যেতে পারে। এমনকি লাইনসহ যে
কোনাে দিকে কাত হয়ে যেতে পারে। তাই যে কোনাে অবস্থায় পােলকে সােজা বা খাড়া রাখতে। পােলে প্রযুক্ত টানের
বিপরীত দিকে আর একটি টানের ব্যবস্থা করা হয়। টানা বলতে এই বিপরীতমুখী টানকে বুঝায়। স্টিলের তার দ্বারা সাধারণত
এই টানা দেওয়া হয়। কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে টানার পাশাপাশি খুঁটি দিয়ে ঠেকাও দেওয়া হয়।
টানা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা:
(ক) প্রান্তিক পপালের একপাশে টান থাকে বলে গােল তারের টানে কাত হয়ে যেতে পারে।
(খ) কৌণিক বা অ্যাঙ্গোল পােলে দুইদিকের তারের টান পরস্পর বিপরীতমুখী নয়। ফলে উভয় তারের লব্ধ।
বলের দিকে পােল কাত হয়ে যেতে পারে।
(গ) যে সেকশন পােল হতে আড়াআড়ি লাইন টানা হয় এটি আড়াআড়ি লাইনের টানে কাত হয়ে যেতে পারে।
(ঘ) সেকশন পােলের দুই পাশের তারের টান বিপরীতমুখী হলেও পরস্পর সমান নাও হতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে।
বেশি রানের দিকে পেল কাত হয়ে যেতে পারে।
(ঙ) ঝড়ের সময় বাতাসের চাপে ট্যানজেন্ট পােল লাইনের আড়াআড়ি দিকে কাত হয়ে যেতে পারে। যে কোনাে
অবস্থায় যে কোনাে পােলকে তার নিজস্ব অবস্থানে ঠিক রাখতে অর্থাৎ যে কোনাে দিকে কাত হয়ে যাওয়ার হাত থেকে
বাঁচানোর জন্য পালের সঙ্গে টানা ব্যবহার করা একান্ত প্রয়োজন।
টানা লাগানোর প্রয়োজনীয় মালামাল:
টানা লাগানোর জন্য সাধারণভাবে নিম্নলিখিত মালামালগুলো প্রয়োজন হয় –
১. স্টে সেট : এটি টানার গােড়ার দিকের অংশ। এটি বিভিন্ন অংশ নিয়ে গঠিত।
যেমন- থিম্বল, বাে , রেচেট নাট, সেট রড; অ্যাংকর প্লেট, বােল্টের মাথা ইত্যাদি।
২. স্টে তার : স্টে বা টানার তার হিসাবে সাধারণত হার্ডড্রন দস্তার প্রলেপ দেওয়া পাকানাে লােহার তারের গুচ্ছ।
ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি গুচ্ছে তিন, চার, পাঁচ, সাত বা উনিশটি করে তার থাকে। সচরাচর সাত বা উনিশ
গুচ্ছের তারই বেশি ব্যবহৃত হয়।
৩. গাই ইনসুলেটর : এটি চীনা মাটির তৈরি ইনসুলেটর বিশেষ। এর দুই প্রান্তের কাছাকাছি দুটি ছিদ্র থাকে। ছিদ্র
দুটিতে দুটি স্টে তার বাঁধা হয়।
৪. স্টে ক্ল্যাম্প : পালের সাথে স্টে তার আটকানোর জন্য স্টে ক্ল্যাম্প ব্যবহার করা হয়। 
৫. টার্ন বাকল : তারের টানে স্টে তার লম্বা যাতে পােল কাত হতে না পাডম
মম ঢানে স্টে তার লম্বা হয়ে যাতে পােল কাত হতে না পারে, সেজন্য টান বাকল ব্যবহা
করা হয়। এটিকে স্টে তারের উপরের দিকে পােলের কাছাকাছি অথবা লে
‘ তারের উপরের দিকে পোলের কাছাকাছি অথবা স্টে তারের নিচের দিকে স্টে সেটের।
থিম্বল কাছাকাছি লাগানো হয়।
টানা লাগানোর পদ্ধতি:
(ক) নকশা অনুযায়ী পােল হতে নির্দিষ্ট দূরত্বে এবং সঠিক দিকে টানার গােড়ার জায়গা চিহ্নিত করতে হবে। সাধারণ টানা
হলে পেপাল এর গোড়া হতে কতটুকু উপরে টানা বাধা হবে পােলের গােড়া থেকে টানার গােড়ার দূরত্বতার সমান হতে হবে।
আউট সিগার টানার ক্ষেত্রে যথাসম্ভব অধিক দূরত্বে টানার গােড়ার স্থান নির্ধারণ করতে
(খ) গর্তের ব্যাস টানার সেটের অ্যাংকর প্লেটের চেয়ে প্রায় ৬ ইঞ্চি বেশি রেখে নির্ধারিত স্থানে একটি গর্ত খনন ।
করতে হবে। গর্তের গভীরতা এমন হতে হবে যাতে বা এর নিচের অংশ মাটি থেকে ৫/৬ ইঞ্চি উপরে থাকে।
(গ) স্টে রড স্থাপন করার জন্য গর্তের যে পাশে পােল আছে সেই পাশে একটি নালা কাটতে হবে।।
(ঘ) অতঃপর স্টে-সেটের অ্যাংকর প্লেট গর্তে স্থাপন করতে হবে এবং স্টে-রড় কাত করে নালাতে এমনভাবে।
স্থাপন করতে হবে যাতে স্টে-রড ও স্টে-তার একই লাইন বরাবর অবস্থানে থাকে। এবার মাটি ভরাট করে ।
শক্তভাবে চাপ দিতে হবে। 
(ঙ) টানা তারকে স্টে-ক্ল্যাম্পের সাথে আটকিয়ে ক্ল্যাম্পকে পােলের সাথে আটকাতে হবে। কাঠের পােলে ক্রস আর্মি গোড়ায়
এবং টিউবুলার পোলের সােয়েজে ক্ল্যাম্প আটকাতে হবে। ।
(চ) টানা তারের অপর প্রান্ত গাই ইনসুলেটরে আটকিয়ে গাই ইনসুলেটরকে আর একটি টানা তারের সাহায্যে।
স্টে-সেটের থিম্বলের সাথে টেনে বেঁধে দিতে হবে।
(ছ) টার্ন বাকল ব্যবহার করা হলে টার্ন বাকল কে টানা তারে বাঁধতে হবে। 

You may also like...

Leave a Reply